বৃহস্পতিবার, ২ জুন, ২০১১

মন্তব্য প্রতিবেদন : তত্ত্বাবধায়ক সরকার আজ বোঝা!




প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ অনুযায়ী সংবিধান সংশোধনের নিমিত্তে গঠিত বিশেষ কমিটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই কমিটির সদস্য এবং প্রধানমন্ত্রীর ভাই শেখ সেলিম এমপিকে টেলিভিশনে বলতে শুনলাম, আদালত তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে অবৈধ ঘোষণা করেছে, সেই অবৈধ বোঝা আমরা ঘাড়ে নেব কেন? এই প্রশ্নের উত্তর দিতে হলে ১৭ বছর আগের বাংলাদেশে ফিরে যেতে হয়। ১৯৯৪ সালে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী এবং সংসদের তত্কালীন বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই আওয়ামী লীগ, জামায়াতে ইসলামী এবং জাতীয় পার্টি সম্মিলিতভাবে দুই বছরব্যাপী সফল, সহিংস আন্দোলনের মাধ্যমে শেখ সেলিম বর্ণিত অবৈধ বোঝাটি জাতির ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়েছিলেন। সেদিন আওয়ামী লীগ নেত্রী সংবাদ সম্মেলন করে বর্তমানে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে কারারুদ্ধ জামায়াত নেতা মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সালাহ্উদ্দিন কাদের চৌধুরী (তখন এনডিপি প্রধান) ও ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদকে (তখন জাতীয় পার্টির নীতিনির্ধারক) পাশে বসিয়ে সর্বপ্রথম ‘অবৈধ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের’ রূপরেখা জাতির সামনে উপস্থাপন করেছিলেন। সেই সংবাদ সম্মেলনেই আজকের সংবিধান সংশোধন কমিটির কো-চেয়ারম্যান সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, দল নিরপেক্ষ, তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতিকে যুগান্তকারী আখ্যা দিয়ে তার স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে বক্তব্য রেখেছিলেন। সেই সময় ক্ষমতাসীন দল বিএনপি’র অবস্থান ছিল উল্টো মেরুতে। তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ‘পাগল এবং শিশু ছাড়া কেউ নিরপেক্ষ নন’ বক্তব্য দিয়ে আওয়ামীপন্থী সংবাদ মাধ্যম, বুদ্ধিজীবী এবং কলামিস্টদের দ্বারা দারুণভাবে সমালোচিত হয়েছিলেন।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে আন্দোলন চলাকালীন আমি বর্তমান আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর বেসরকারি খাতবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের মালিকানাধীন বেক্সিমকো গ্রুপে কর্মরত ছিলাম। তখনকার একদিনের অভিজ্ঞতার কথা বলি। যতদূর জানি, সালাহ্উদ্দিন কাদের চৌধুরীর সঙ্গে সালমান এফ রহমানের আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে এবং বর্তমান বিএনপি’র স্ট্যান্ডিং কমিটির এই প্রভাবশালী নেতার সঙ্গে আমারও ব্যক্তিগত পরিচয়ের সূত্রপাত বেক্সিমকো থেকেই। সেই থেকে সব বিষয়ে একমত পোষণ না করলেও আমাদের ব্যক্তিগত বন্ধুত্ব অটুট রয়েছে। ১৯৯৫ সালে সরকার বিরোধী উত্তাল আন্দোলনের সময় আমার সামনেই একদিন সালাহ্উদ্দিন কাদের চৌধুরী বেক্সিমকোর টেলিফোনে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বিএনপি সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার লক্ষ্যে পরিচালিত যৌথ আন্দোলনের কৌশল নিয়ে দীর্ঘক্ষণ আলাপ-আলোচনা করেছিলেন। আলোচনাকালে সালাহ্উদ্দিন ভাইকে তার স্বভাবসুলভ স্টাইলে রঙ্গ-রসিকতাও করতে শুনেছিলাম। তত্ত্বাবধায়ক সরকার আন্দোলনের সময় মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী এবং সালাহ্উদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে কথিত যুদ্ধাপরাধের অভিযোগের বিষয়টি সম্ভবত আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর তখন জানা ছিল না! আজ যখন দেখি, সেই শেখ হাসিনার নির্দেশেই সালাহ্উদ্দিন কাদের চৌধুরী তারই পুলিশ এবং গোয়েন্দা বাহিনী দ্বারা রিমান্ডে নির্মমভাবে নির্যাতিত অপমানিত হচ্ছেন, তখন সেসব দিনের কথা বড় মনে পড়ে যায়। নীতিহীন রাজনীতিবিদদের হাতে অত্যাচারিত ও প্রতারিত হওয়াই বোধহয় এদেশের দরিদ্র, অসহায় সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের বিধিলিপি।
আওয়ামী লীগের রাজনীতির স্ববিরোধিতার দিকে খানিক দৃষ্টিপাত করা যাক। দলটির স্তাবকশ্রেণী দাবি করে থাকে যে, আওয়ামী লীগ নাকি সর্বদাই গণতন্ত্রের সপক্ষ শক্তি এবং বিএনপি’র জন্মকালে সেনাবাহিনী সংশ্লিষ্টতার কারণে রাজনৈতিক দল হিসেবে তারা অস্পৃশ্য। দলবাজ আদালতের ধরা-ছোঁয়ার বাইরের নির্মোহ ইতিহাস কিন্তু এ বিষয়ে ভিন্ন সাক্ষ্য দিচ্ছে। ১৯৮২ সালে জেনারেল এরশাদের সামরিক অভ্যুত্থানকে আওয়ামী লীগ কেবল স্বাগতই জানায়নি, ১৯৮৬ সালে জামায়াতে ইসলামীকে সঙ্গে নিয়ে পাতানো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে স্বৈরশাসক এরশাদের অবৈধ শাসনের বৈধতা প্রদানের পথও তারাই প্রশস্ত করেছিল। সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার আদর্শিক অবস্থানের কারণেই বেগম খালেদা জিয়া আপসহীন নেত্রী রূপে নন্দিত হয়েছিলেন। ১৯৯৬ সালে জেনারেল নাসিমের ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানের পেছনের অভিন্ন রাজনৈতিক কালো হাতটির পরিচয়ও দেশবাসীর জানা। এক এগারোর জাতিসংঘ নির্দেশিত ক্যুদেতার বিরুদ্ধে আমরা হাতে গোনা কয়েকজন মাত্র যখন বন্দুকের নলের মুখে দাঁড়িয়েও সাহস করে প্রতিবাদ করে যাচ্ছিলাম, সেই সময় আজকের প্রধানমন্ত্রী তাদের সব অবৈধ কর্মকে আগাম বৈধতা দানের প্রকাশ্য ঘোষণা দিয়েছিলেন। সুতরাং, এরশাদ আমল থেকে শুরু করে মইন-ফখরুদ্দিন জুটি পর্যন্ত তাবত্ স্বৈরাচারী সরকারের সব গণবিরোধী অপকর্মের দায়-দায়িত্ব মহাজোট নেত্রী আজ অস্বীকার করতে পারেন না। বর্তমান ক্ষমতাসীন মোর্চার প্রধান দলটির ধারাবাহিক স্ববিরোধিতা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতেও জনগণ এখন দেখতে পাচ্ছে। যে অবৈধ বোঝা শেখ সেলিম কৌশলগত কারণে আর বহন করতে চাচ্ছেন না, অসহায় জনগণের কাঁধে সেটি এতদিন ধরে চাপিয়ে রাখার অপরাধে বিচারের কাঠগড়ায় না দাঁড়ান, তারা হাত জোড় করে অন্তত ক্ষমা তো চাইতে পারেন। নাকি এটুকু দাবি করলেও আমরা ফ্যাসিবাদের নিগ্রহের শিকার হব?
সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করে সদ্য সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের নেতৃত্বে দেশের সর্বোচ্চ আদালত সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে যে বিভক্ত রায় দিয়েছেন, স্ববিরোধিতার মাপকাঠিতে সেটিও গিনেস বুকে অনায়াসে স্থান করে নিতে পারে। মাননীয় লর্ডশিপরা বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রসপেকটিভভাবে অবৈধ, তবে আগামী দুই মেয়াদ অর্থাত্ অন্তত আরও দশ বছর জনস্বার্থে এই পদ্ধতি চলতে পারে। ইংরেজি শব্দ ‘প্রসপেকটিভ’-এর অর্থ সাধারণ জ্ঞানে যা বুঝি তা হলো, এখন থেকে। আর বাংলা একাডেমী থেকে প্রকাশিত ইংরেজি-বাংলা অভিধানে শব্দটির অর্থ লেখা আছে, ‘ভাবীসাপেক্ষ’। যে আইন এখন থেকেই অবৈধ কিংবা ভাবীসাপেক্ষ, সেটি আবার দশ বছর চলে কি করে, তার জবাব দেয়ার মতো মেধা আমার নেই। জাতিকে জ্ঞানদান করার জন্য ‘শতাব্দীর সেরা ব্যক্তিত্ব’ বিশেষণে ভূষিত বিচারপতি খায়রুল হকের কাছে দৌড়ানো যেত, কিন্তু তার আর্থিক অনৈতিকতা ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর থেকে তিনি আল্লাহ্র দোহাই দিয়ে তাকে একা থাকতে দেয়ার আকুতি জানিয়েছেন। রায় নিয়ে আরও কথা আছে। রেট্রোসপেকটিভভাবে পঞ্চম সংশোধনী বাতিল করে সংবিধানের মূল নীতি থেকে কলমের এক খোঁচায় ‘আল্লাহ্র প্রতি পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’ সরিয়ে ফেলা হলেও ত্রয়োদশ সংশোধনীর ক্ষেত্রে ‘প্রসপেকটিভ’ আমদানি করা হলো কেন? উত্তর সম্ভবত, তাহলে তো ১৯৯১ পরবর্তী সব সরকারই অবৈধ হয়ে যায়। তাতেও অবশ্য বিচারপতি খায়রুল হকের কোনো অসুবিধা ছিল না, যদি কোনোক্রমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচিত শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন ১৯৯৬ সাল এবং বর্তমান সরকারকে বৈধ দেখানো যেত। আদালতের ভাষায় ত্ধঃরড় বলে একটা শব্দ আছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রশ্নে আপিল বিভাগের মাননীয় বিচারপতিদের কে কোন ত্ধঃরড়’র ভিত্তিতে কি রায় লিখেছেন, সেটি আমজনতার জানার কোনো উপায় নেই। তবে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থে পরিচালিত ঔঁফরপরধষ ধপঃরারংস-এর নামে আমাদের রাষ্ট্রের ভিত্তিমূলে গত আড়াই বছরে যেভাবে আঘাতের পর আঘাত হেনে দুর্বল করে ফেলা হয়েছে, তার জন্য অবশ্যই একদিন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বর্ণিত শতাব্দীর সেরা বিচারকটিকে জবাবদিহি করতে হবে। ‘প্লিজ, লিভ মি এলোন’ বলে সর্বদা পার পাওয়া যাবে না।
রবীন্দ্র সঙ্গীতের পরম ভক্ত এই হাদিস বিশারদ বিচারপতি আমাদের সংবিধানকে নির্দয়ভাবে ছিঁড়ে-খুঁড়ে রেখে গেছেন। পঞ্চম, সপ্তম এবং ত্রয়োদশ সংশোধনী তার হাত দিয়েই বিলুপ্ত হয়েছে। এই তিন সংশোধনীর রায়ের ধারাবাহিকতায় অষ্টম এবং একাদশ সংশোধনীর অবস্থাও নড়বড়ে। অষ্টম সংশোধনীতে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম এসেছে এবং সংবিধানে একাদশ সংশোধনী আনয়ন করা হয়েছিল যাতে বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমেদ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন শেষে প্রধান বিচারপতির পুরনো পদে ফিরে যেতে পারেন। বাংলাদেশের যে ক’জন সম্মানিত নাগরিককে নানা কারণে আমি দূর থেকে গভীরভাবে শ্রদ্ধা করি, তাদের মধ্যে বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ অন্যতম। ১৯৯০ সালের টালমাটাল পরিস্থিতিতে তিনি রাষ্ট্রের এক নম্বর ব্যক্তির দায়িত্ব গ্রহণ করতে অসম্মত ছিলেন, এটাও সত্যি। তারপরও শুধু দেশের একজন নাগরিকের কোনো ইচ্ছাপূরণে সংবিধান সংশোধনের বিষয়টি মেনে নেয়া কঠিন। পঞ্চম, সপ্তম এবং ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের পর এখন কোনো নাগরিক অষ্টম এবং একাদশ সংশোধনী বাতিলের জন্য যদি আদালতের শরণাপন্ন হন, তাহলে আমার ধারণা দুটো সংশোধনীকেই রক্ষা করা কঠিন হবে। রাজনৈতিকভাবে স্পর্শকাতর এবং বিতর্কিত বিষয়াবলীতে আদালতকে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে জড়িয়ে বিচারপতি খায়রুল হক আদালতের মর্যাদা শেষ করার পাশাপাশি দেশকেও স্থায়ী বিভাজনের দিকে নিয়ে গেছেন। এই দেশের একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমার বিবেচনায় কোনো ব্যক্তি এতবড় রাষ্ট্রদ্রোহ সংঘটিত করার পর কেবল আল্লাহ্র দোহাই দিয়ে গা বাঁচাতে পারেন না।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে বাংলাদেশের মতো এক হতদরিদ্র দেশের সম্পদের বিপুল ক্ষতি সাধন করা হয়েছিল। তদুপরি শত শত অমূল্য প্রাণ ঝরেছিল সেদিন। আদালতের কাঁধে বন্দুক রেখে আজ যারা বিজয়ীর বেশে টেলিভিশন ক্যামেরার সামনে হাস্যোজ্জ্বল মুখে দাঁড়িয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ঝেড়ে ফেলার সদর্প ঘোষণা দিচ্ছেন, তাদের ১৯৯৪ সালে ফিরে তাকানোর অনুরোধ করি। সাম্রাজ্যবাদ ও আধিপত্যবাদের আস্কারায় দেশকে পুনর্বার সংঘাতের দিকে নিয়ে সম্পদ ও প্রাণহানির দায় থেকে আপনারা মুক্ত থাকতে পারবেন না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতিকে যুগান্তকারী আখ্যা দিয়ে একবার ইতিহাসে নাম লিখিয়ে, আবার ১৭ বছর বাদে সময়-সুযোগমত আদালতকে দিয়ে সেই পদ্ধতিকে বাতিল করানোকেও যুগান্তকারী বলে ইতিহাসে দ্বিতীয়বার নাম লেখাতে চাইবেন—এটা দেশের জনগণ মেনে নেবে না। গত মাসের ৩০ তারিখে সংবিধান সংশোধন কমিটি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সভাশেষে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রথা বাতিলের ঘোষণা দিয়ে এর পরিণতির সব দায়ভার কিন্তু তাদেরই নেত্রী শেখ হাসিনার কাঁধেই চাপিয়ে দিয়েছেন। এর আগে এই কমিটির সঙ্গেই আওয়ামী লীগের সভানেত্রী হিসেবে দেখা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের পক্ষ থেকে সংবিধান সংশোধন বিষয়ে বিশদ সুপারিশমালা দিয়ে এসেছিলেন। যতদূর মনে পড়ে, সেদিন তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতির পক্ষেই তার অভিমত জানিয়েছিলেন। আজ হঠাত্ করে তার ইউ টার্ন এবং পারিষদদের সাধু, সাধু রব অনেক প্রশ্নের জন্ম তো দিয়েছেই, তার সঙ্গে দেশকেও গভীর অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিয়েছে। রাজনৈতিক দল ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণী, পেশার যেসব বাছাই করা নাগরিকের সঙ্গে সংবিধান সংশোধন কমিটি বৈঠক করেছে, তাদের মধ্যেও অন্তত শতকরা নব্বইভাগ এই পদ্ধতি অব্যাহত রাখারই সুপারিশ করেছেন। এরপর কমিটির দায়িত্ব ছিল সবার মতামত সন্নিবিষ্ট করে চূড়ান্ত সুপারিশমালা সংসদের বিবেচনার জন্য উপস্থাপন করা। দেশের বিশিষ্ট সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠকেও সংবিধান সংশোধন কমিটির চেয়ারম্যান এবং কো-চেয়ারম্যান যথাক্রমে সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী ও সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এমন কথাই বলেছিলেন। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন, এমন কোনো ইঙ্গিত আজ পর্যন্ত কমিটির কোনো সদস্যের কাছ থেকেই পাওয়া যায়নি। সেক্ষেত্রে সর্বমহলের সঙ্গে আলোচনার নামে এই কালক্ষেপণ এবং তামাশার কোনো প্রয়োজন ছিল না। এই সর্বনাশা পথ থেকে বিরত হওয়ার এখনও সময় আছে। সংবিধান সংশোধন কমিটির সব দায়-দায়িত্ব নিজের কাঁধে টেনে নেয়ার ঝুঁকির বিষয়টি নিয়েও আশা করি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আর একবার ভেবে দেখবেন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন