বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০১৩

এরশাদের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিলেন জাপার ৫ মন্ত্রী

নির্বাচনকালীন মন্ত্রিসভা থেকে সরে যেতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন পাঁচ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী। আজ (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যা ৬টায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও বেসরকারি বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার। এরশাদের কাছে যারা পদত্যাগপত্র দিয়েছেন তারা হলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী রওশন এরশাদ, বাণিজ্যমন্ত্রী জিএম কাদের বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী এবিএম রুহুল আমীন হাওলাদার, পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু এবং প্রেসিডিয়াম সদস্য মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম। সংবাদ সম্মেলনে রুহুল আমীন হাওলাদার বলেন, আমরা মনে করেছিলম- বিএনপিসহ সকল দল নির্বাচনে অংশ নেবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিএনপিসহ বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল নির্বাচনে না আসায় বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য, কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ এবং দলীয় সংসদ সদস্যদের নিয়ে এরশাদ দীর্ঘ বৈঠক করেন। বৈঠকে মন্ত্রী পরিষদ থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত হয়। তিনি জানান, সিঙ্গাপুর থেকে চিকিৎসা শেষে দেশে ফিলেই রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ এডভোকেটের সঙ্গে দেখা করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ পদত্যাগপত্রগুলো জমা দেবেন। রুহুল আমীন হাওলাদার আরো জানান, বাকি দু'জন পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুকে টেলিফোন করে পদত্যাগপত্র দিতে বলা হয়েছে। শিগগিরই তারাও পদত্যাগপত্র জমা দেবেন। এর আগে আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পতাকাবিহীন গাড়িতে করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যান জাতীয় পার্টির নেতা ও নির্বাচনকালীন সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রওশন এরশাদ, বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী রুহুল আমিন হাওলাদার এবং যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু। সেখানে তারা দুপুর দেড়টা পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বেরিয়ে জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও নির্বাচনকালীন সরকারের বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী রুহুল আমিন হাওলাদার জানিয়েছেন, "আমরা এখনো পদত্যাগপত্র জমা দেইনি। আমরা প্রধানমন্ত্রীকে দলের অবস্থান জানিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী একটি প্রস্তাব দিয়েছেন। আমরা এ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করব। এরপর চেয়ারম্যান যে সিদ্ধান্ত দেন আমরা তাই কার্যকর করব।" এরপর মন্ত্রীরা প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় থেকে বেরিয়ে এরশাদের প্রেসিডেন্ট পার্কে ফিরে যান। সেখানে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাদের আলোচনা সম্পর্কে জাপা প্রেসিডেন্টকে অবহিত করেন। মঙ্গলবার পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ আকস্মিকভাবে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। এর পরদিন বুধবার তিনি তার দলের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার এবং মন্ত্রীদের পদত্যাগেরও নির্দেশ দেন। এরপর আজ এক সংবাদ সম্মেলনে এরশাদের একান্ত সচিব জাতীয় পার্টির কোষাধ্যক্ষ মেজর (অব.) খালেদ জানিয়েছেন, নির্বাচনকালীন মন্ত্রীসভা থেকে জাতীয় পার্টির মন্ত্রীরা পদত্যাগ না করলে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। তিনি বলেন, যদি কেউ পদত্যাগ না করেন তাহলে তাকে জাতীয় পার্টি থেকে বহিষ্কার করা হবে এমনটা জানিয়েছেন পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ।
নির্বাচনকালীন সরকারে জাতীয় পার্টির মন্ত্রীরা হলেন- বাণিজ্যমন্ত্রী জি এম কাদের, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রুহুল আমিন হাওলাদার, পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী রওশন এরশাদ। প্রতিমন্ত্রীরা হলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু এবং নারী ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সালমা ইসলাম। এ ছাড়া, উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ পাওয়া জিয়াউদ্দিন বাবলুকে আজ বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর নারী ও শিক্ষা উন্নয়নবিষয়ক উপদেষ্টার দায়িত্ব দেয়া হয়।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন