বুধবার, ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫
দুই দলীয় অকার্যকর পদ্ধতির শিকার বাংলাদেশ: দি ইকোনমিস্ট
নতুন বার্তা :
কয়েক মাসে প্রায় ১৬ কোটি মানুষের দেশ, বাংলাদেশ আবারও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া রাজধানী ঢাকায় তার পার্টি অফিসে অবরুদ্ধ। তার দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) দেশব্যাপী সড়ক, রেল আর নৌপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে। গত বছরের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের প্রথম বর্ষপূর্তিতে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালনে নিষেধাজ্ঞাই ছিল এ অস্থিরতার সূত্রপাত। সর্বশেষ ওই নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বিরোধী দলের নির্বাচন বর্জনের বদৌলতে সহজেই পুনঃনির্বাচিত হয়। চলমান আন্দোলনে নিহত হয়েছেন প্রায় ৫০ জন। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১০ হাজারেরও বেশি বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীকে। বেশির ভাগ বিএনপি নেতা জেলে, নির্বাসনে বা আত্মগোপন করে আছেন। তারা বিভিন্ন অপরাধ মামলার মুখোমুখি যা পরবর্তী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা থেকে তাদেরকে নিষিদ্ধ করতে পারে।
লন্ডনের বিখ্যাত দি ইকোনোমিস্ট পত্রিকাটির ২ ফেব্রয়ারি অনলাইন ভার্সনে ‘ডযু ইধহমষধফবংয’ং ঢ়ড়ষরঃরপং ধৎব নৎড়শবহ’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এ সপ্তাহের ঘটনাপ্রবাহ সঙ্কটপূর্ণ এক স্থানে পৌঁছেছে বলে মনে হচ্ছে। সরকার খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সংযোগ সাময়িকভাবে বিচ্ছিন্ন করে দেয়। অবরোধের পাশাপাশি তিনি ১লা ফেব্রুয়ারি থেকে তিন দিনের হরতালের ডাক দেন। কেন বাংলাদেশের রাজনীতি এ বিশৃঙ্খলায় অধঃপতিত হয়েছে?
দুই দলীয় অকার্যকর পদ্ধতির শিকার বাংলাদেশ। যেখানে দুই দলনেতা, ‘দ্য ব্যাটলিং বেগমস’ দেশকে রসাতলে যেতে দিয়ে ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা চরিতার্থ করছেন। ১৯৯১ সাল থেকে তারা দু’জন পালাবদল করে ক্ষমতায় এসেছেন। উভয় দলই যেহেতু জানে অপর দল নির্বাচনে জালিয়াতি করবে, তাই নির্বাচন হতো অন্তর্র্বতীকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে।
২০০৬ সালে দুর্নীতিগ্রস্ত ও অযোগ্য একটি সময়কাল সমাপ্তি হবার পর খালেদা জিয়ার দলও তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি জালিয়াতি করার চেষ্টা করেছিল। নির্দলীয় একটি ‘টেকনোক্র্যাট’ সরকারকে সমর্থন দিয়ে হস্তক্ষেপ করে সেনাবাহিনী। ওই সরকার দুই বছর পর নির্বাচন আয়োজন করে, যেখানে শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ ভূমিধস বিজয় অর্জন করে। দলটি তার সংখ্যাগরিষ্ঠতা ব্যবহার করে ক্ষমতা সুসংহত করার চেষ্টা করেছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিল করে, বিএনপি নেতাদের ধরপাকড় আর তাদের বড় জোট অংশীদার জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করে ভবিষ্যতে বিএনপির নির্বাচনে জেতা অসম্ভব করে তোলার চেষ্টা করেছে। সরকার এখন দাবি করছে তারা বিএনপির ধ্বংসাত্মক কর্মকা- এবং সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা করছে। এদিকে, সরকার একদলীয় রাষ্ট্র গড়ে তোলার চেষ্টা করছে বলে বিরোধী দল দাবি করছে। উভয়ের কথাতেই যুক্তি আছে।
দুই নেত্রীর ব্যক্তিগত বৈরিতা- বিজয়ীই সব কিছু পাবে রাজনীতিতে এমন নীতি লালনে সহায়তা করেছে। এখানে জালিয়াতির নিষ্ফল নির্বাচন বিরোধী দলকে রাজপথে নামতে বাধ্য করেছে। দেশজুড়েই দু’দলের অবস্থান দৃঢ়। টেকনোক্র্যাট সরকারের সময়ে এই দু’দলকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য তৃতীয় শক্তির উত্থানে উৎসাহিত করার প্রচেষ্টা কোন ফল বয়ে আনেনি। রাজনৈতিক যে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে তাতে হস্তক্ষেপে বাংলাদেশের প্রতিবেশীর সম্ভবত আগ্রহ নেই। এসব কিছুর পরেও বাংলাদেশে উন্নয়ন সফলতার ভালো রেকর্ড রয়েছে।
খালেদা জিয়ার প্রতি আস্থা নেই ভারত ও পশ্চিমাদের। তারা মনে করেন- চীনকে তিনি অধিকতর ভূমিকা পালনে অনুমতি দেবেন এবং কট্টর ইসলামপন্থিদের প্রতি তার রয়েছে নমনীয়তা। শেখ হাসিনা বলতে পছন্দ করেন যে, বাংলাদেশে বড় কোনো সন্ত্রাসী হামলা তার সময়ে হয়নি। অথবা অন্য কোথাও সন্ত্রাসী হামলার যোগসূত্র বাংলাদেশ পর্যন্ত আসেনি।
যাহোক, বিএনপির অবরোধে অস্থিরতা বাড়ছে। অগ্নিদগ্ধ মানুষে ভরে যাচ্ছে হাসপাতাল। দমন-পীড়নে পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতি হচ্ছে। পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়ে হয়তো হস্তক্ষেপ করার কথা ভাবতে পারে সেনাবাহিনী। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে তারা লোভনীয় দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের রয়েছে সুনাম। তাই সরাসরি অভ্যুত্থানের বিষয়ে তারা সতর্ক হতে পারেন। চলমান অস্থিরতাকে সরকার রাজনৈতিক সঙ্কট হিসেবে স্বীকার করবে না। নতুন নির্বাচনের সম্ভাবনাও ক্ষীণ। এ অবস্থায় জেনারেলরা এটা অনুধাবন করতে পারেন যে, সময় শেষ- একথা বলা ছাড়া তাদের সামনে আর কোন পথ খোলা নেই। যেমনটা তারা আট বছর আগে করেছিলেন। বিদ্বেষপূর্ণ রাজনীতিতে কোনো পক্ষই জয়ী হয় না।
দি ইকোনোমিস্ট’র প্রতিবেদনটি এখানে তুলে ধরা হলো:
Why Bangladesh’s politics are broken
Feb 2nd 2015, 23:50 by T.J. / BANYAN
FOR the past month Bangladesh, a country of nearly 160m people, has (yet again) been paralysed. The opposition leader, Khaleda Zia, has been confined to a party office in the capital, Dhaka. Her Bangladesh Nationalist Party (BNP) has been staging a nationwide blockade of roads, railways and waterways. The trigger for the unrest was a banned protest to mark the anniversary on January 5th of last year’s election, in which the incumbent Awami League, led by the prime minister, Sheikh Hasina, was re-elected easily thanks to an opposition boycott. Nearly 50 people have been killed and more than 10,000 opposition activists arrested. BNP leaders are mostly in jail, in exile or in hiding, and face criminal charges that will probably bar them from running in the next election. This week events appeared to be reaching a head. The government temporarily cut the electricity supply and internet cables to Mrs Zia’s redoubt. In addition to the crippling blockade, she called a three-day national strike from February 1st. Why has politics degenerated into this mess?
Bangladesh suffers a dysfunctional two-party system, in which the two party leaders, the “battling begums”, wage a personal vendetta at the country’s expense. From 1991 they have rotated in office. Because both parties know that the other will rig elections, polls used to be conducted under an interim caretaker administration. In 2006 Mrs Zia’s party, at the end of a particularly corrupt and incompetent stint in office, tried to rig that system too. The army stepped in to back a non-party “technocratic” government, which after two years held an election won in a landslide by Sheikh Hasina’s Awami League. The party has used its majority to entrench its power, and make it impossible for the BNP ever to win an election: by abolishing the caretaker system, hounding its leaders and banning its largest coalition partner, Jamaat-e-Islami, for its avowedly Islamic platform. Now the government claims it is combating acts of vandalism and terrorism by the BNP. The opposition accuses the government of trying to create a one-party state. Both sides have a point.
The personal animus between the begums has helped foster a winner-takes-all approach to politics in which the futility of rigged elections forces the opposition on to the streets. Both parties are entrenched across the country; attempts, during the technocratic interregnum, to encourage “third forces” to emerge to challenge them proved fruitless. Bangladesh’s neighbours are unable and perhaps unwilling to meddle in the political deadlock. Despite everything, the country has a fair record of developmental success. And India and the West distrust Mrs Zia, seeing her as both willing to allow China a greater role in the country, and as being soft on Islamist extremism. Sheikh Hasina likes to point out that on her watch no big terrorist attack has taken place in Bangladesh. Nor has one elsewhere been traced back to the country.
However, with the BNP’s transport blockade prompting growing unrest, and victims of arson attacks filling the burns units of hospitals, the climate of repression worsening, the army may feel compelled to intervene. Mindful of its reputation (and lucrative UN peacekeeping duties), it will be wary of an outright coup. But it seems highly unlikely the government can be persuaded to treat the unrest as a political crisis and call fresh elections. So the generals may feel, as they did eight years ago, that they have no option other than to call “time out” on a political brawl that neither side can win.
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন